বর্ষণস্নাত যুবভারতীতে পাসিং ফুটবলে বাজিমাত লাল হলুদের। - দীপ্তাশিস দাশগুপ্ত - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

বর্ষণস্নাত যুবভারতীতে পাসিং ফুটবলে বাজিমাত লাল হলুদের। - দীপ্তাশিস দাশগুপ্ত

Share This
ইস্টবেঙ্গল -৩
মহমেডান স্পোর্টিং - ২

এককথায় অনবদ্য!

স্রেফ অনবদ্য।

এভাবেই ব‍্যাখ‍্যা করা যেতে পারে আজকের ইস্টবেঙ্গল দলের পারফরম্যান্স! সেইসঙ্গে আলেহান্দ্রো এদিনও সেরে নিলেন বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা।

এই মরসুমে কলকাতা লীগে এ পর্যন্ত মহমেডান বেশ ভালো ফুটবল খেলেছে। হারিয়েছে মোহনবাগানের মত বড় দলকেও। কিন্তু এদিন শুরু থেকেই পাসিং ফুটবলকে হাতিয়ার করে ম‍্যাচের দখল নিয়ে নেয় ইস্টবেঙ্গল। এই ম‍্যাচে আলেহান্দ্রো বিদেশি ফুটবলারদের মধ্যে দলে রাখেন হুয়ান, কোলাডো এবং বোরহাকে।  ফলে হুয়ান, কোলাডো, পিন্টু, লালরিনডিকারা মাঝমাঠে ফুল ফোটাতে শুরু করেন। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাস খেলে চেষ্টা করতে থাকেন মহমেডান রক্ষণে ফাটল ধরানোর। যার দরুণ মাত্র তেরো মিনিটেই গোলের দরজা খুলে ফেলে ইস্টবেঙ্গল। রোনাল্ডো অলিভিয়েরাকে কোলাডো মাঝমাঠ থেকে বল বাড়ান। রোনাল্ডো সেই বল উইংয়ে ঠেলে দেন কমলপ্রীতের উদ্দেশ্যে। সেই বল ধরে কমলপ্রীত গোলমুখে মাপা সেন্টার রাখলে অসাধারণ ফ্লাইং হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন পিন্টু মাহাতা।

গোলটি খাওয়ার পর সম্বিত ফেরে দীপেন্দু বিশ্বাসের ছেলেদের। গোল শোধ করবার তাগিদে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেন তাঁরা। আঠারো মিনিটের মাথায় সত্যমের একটি জোরালো শট লাল হলুদ গোলরক্ষক রালতেকে পরাস্ত করে ক্রসপিসে লাগে। এর ঠিক কিছুক্ষণ পরেই সমতায় ফেরে সাদা কালো শিবির। পেনাল্টি বক্সের ঠিক বাইরে নাওরেমের হ‍্যান্ডবল করার কারণে ফ্রিকিক পায় মহমেডান। ফ্রিকিক থেকে করিমের শট বোরহা হেড করে ক্লিয়ার করতে গেলে তা গোলে ঢুকে যায়। এরপর সাতাশ মিনিটে বোরহা চোট পাওয়াতে আলেহান্দ্রোর সামনে সুযোগ এসে যায় আশির আখতারকে নামিয়ে রক্ষণে তাঁর এবং মেহতাব সিংহের জুটিকে পরখ করে নেওয়ার। এবং বিক্ষিপ্ত কিছু মুহূর্ত বাদে এদিন যথেষ্ট সফল সেন্ট্রাল ডিফেন্সে লাল হলুদের এই ভারতীয় জুটি।

মহমেডান সমতায় ফেরার কারণে পুনরায় গোলের জন্য মরিয়া হয় লাল হলুদ ব্রিগেড। এই সময় গোল লক্ষ্য করে বেশ কিছু শটও নেন ইস্টবেঙ্গল দলের খেলোয়াড়রা। কিন্তু বারবারই অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হন তাঁরা। অবশেষে প্রথমার্ধের একেবারে অন্তিম লগ্নে লালরিনডিকার কর্নারে কোলাডোর গোলমুখি হেড ইচ্ছাকৃতভাবে হ‍্যান্ডবল করে থামান মহমেডানের সইফুল। রেফারি সাথে সাথে সইফুলকে লাল কার্ড দেখান ও ইস্টবেঙ্গলের অনুকূলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে ঠান্ডা মাথায় বিপক্ষ গোলরক্ষককে সম্পূর্ণ বোকা বানিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন হাইমে স‍্যান্টোস কোলাডো।

বিরতির পর গোল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পিন্টুকে বসিয়ে মার্কোসকে নামান আলেহান্দ্রো। এবং সেইসঙ্গে হুয়ান কোলাডো ও মার্কোসের কম্বিনেশনও পরখ করে নেন তিনি। বলাই বাহুল্য, এই তিন বিদেশি খেলোয়াড় একসঙ্গে মাঠে থাকায় ইস্টবেঙ্গল দলের আক্রমণ অনেক বেশি ক্ষুরধার হয়ে ওঠে। তার ওপর আগের ম‍্যাচে গোল পাওয়ার পর এদিনও মার্কোস শুরু থেকেই গোলের জন্য ছটফট করছিলেন। এবং উনষাট মিনিটের মাথায় লালরিনডিকার মাইনাসে পা ছুঁইয়ে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ এ এগিয়ে দেন তিনি। একে দশজনে খেলা, তার ওপর দুই গোলের ব‍্যবধানে পিছিয়ে থাকা, পরিস্থিতি খুবই কঠিন হয়ে ওঠে সাদা কালো শিবিরের পক্ষে। তাও তারা হতোদ্যম না হয়ে লড়াই চালিয়ে যায়। এবং তিরাশি মিনিটে সত্যমের পাস কুয়াসি গোল করে মহমেডানের পক্ষে ব‍্যবধান কমান। এই সময় লাল হলুদের পরিত্রাতা হয়ে ওঠেন গোলরক্ষক রালতে। ম‍্যাচে দুই গোল হজম করতে হলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে দলের পতন রোধ করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে মহমেডানের দ্বিতীয় গোলের ঠিক পূর্বে কুয়াসির একটি শট সেভ।

খেলার ফলাফল শেষ পর্যন্ত ৩-২ ই থাকে। মহমেডান এই নিয়ে এবারের কলকাতা লীগে তাদের সবকটি ম‍্যাচ খেলে উনিশ পয়েন্টে শেষ করল। উল্টো দিকে দশটি খেলায় কুড়ি পয়েন্ট নিয়ে ইস্টবেঙ্গল চলে গেল লীগ শীর্ষে।


ছবিটি তুলেছেন:- তনময় দাস।





No comments:

Post a Comment

Pages