মহমেডান স্পোর্টিং - ৩
মোহনবাগান - ২
এবারের মত কি শেষ হয়ে গেল মোহনবাগানের কলকাতা লীগ জেতার আশা? অঙ্কের বিচারে আশা থাকলেও এই মুহূর্তে লীগ টেবিলের যা পরিস্থিতি তাতে বলা চলে, যে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল তারা।
উল্টোদিকে এদিন জিতে নিজেদের কলকাতা লীগ জয়ের আশা জিইয়ে রাখল মহমেডান। এই মুহূর্তে নয় ম্যাচে মহমেডানের পয়েন্ট ষোল, পিয়ারলেসের থেকে এক পয়েন্ট পিছনে। যদিও তারা পিয়ারলেসের থেকে একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে। সেখানে মোহনবাগানের পয়েন্ট নয় ম্যাচে চোদ্দ। হাতে আর মাত্র দুটি ম্যাচ।
এদিন কিন্তু শুরুটা ইতিবাচকভাবেই করেছিল সবুজ মেরুন শিবির। মাত্র তিন মিনিটেই ফ্রিকিক পায় তারা। এবং বেইতিয়ার ফ্রিকিক তৎপরতার সঙ্গে ক্লিয়ার করেন প্রসেনজিৎ। এর ঠিক পরেই বেইতিয়ার কর্নারে ফ্রানের হেড কোনোরকমে সামাল দেয় মহমেডান রক্ষণ। কিন্তু এরপর ই খেলা ধরে নেয় সাদা কালো ব্রিগেড। জন চিডির একটা জোরালো শট দুর্দান্ত সেভ করেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদার। এবং এরপর ই গোলের দেখা পেয়ে যায় তারা। তীর্থঙ্করের কর্নার মোহনবাগানের রক্ষণ বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে করিম তৎক্ষণাৎ বল জালে জরিয়ে দেন। এরপর ম্যাচের রাশ পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় মহমেডান। দশ মিনিটের মাথায় আবার গোল! এবার তীর্থঙ্কর সরকার নিজেই। মাঝমাঠের থেকে কিছুটা এগিয়ে বল পান তিনি । তারপর বেশ খানিকটা দৌড়ে আঠারো গজের বক্সের ঠিক ভেতর থেকে জোরালো শটে দেবজিৎকে পরাস্ত করে বল জালে জরিয়ে দেন। মহমেডান এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাসী সাদা কালো শিবির আরও দাপটের সঙ্গে খেলতে থাকে। কিন্তু মোহনবাগানও এর মাঝে কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে। মহমেডান গোলরক্ষক প্রিয়ান্ত সিংহ দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেন।
মোহনবাগানকে এরপর লড়াইয়ে ফেরান জোসেব বেইতিয়া। চব্বিশ মিনিটের মাথায় পঁচিশ গজ দূর থেকে অসাধারণ ফ্রিকিকে গোল করেন তিনি। এরপর দুদলই বেশ কিছু সুযোগ পায়। কিন্তু প্রথমার্ধে আর গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে মহমেডান খেলার উপর নিজেদের আধিপত্য পুরোপুরি কায়েম করে বসে। এবং তার ফলস্বরূপ একষট্টি মিনিটে আবার গোল পেয়ে যায় তারা। এবং এবারও দায়ী মোহনবাগান রক্ষণ। বক্সের মধ্যে থেকে কিমকিমা বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে জন চিডি সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে বল জালে জড়িয়ে দেন।
১-৩ এ পিছিয়ে পড়ে মোহন কোচ কিবু ভিকুনা বাধ্য হন তাঁর দলের প্রধান ফরোয়ার্ড চামোরোকে নামাতে। এবং সত্তর মিনিটে বেইতিয়ার ফ্রিকিকে দুর্দান্ত হেডে প্রিয়ান্তকে পরাস্ত করে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের জন্য ব্যবধান কমান চামোরো। কিন্তু গোল পাবার পরে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরার বদলে খেলা থেকে হারিয়ে যায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। খেলার শেষ দিকে বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে মহমেডান। যা থেকে গোল হলে বড় লজ্জায় পড়তে হতো সবুজ মেরুন শিবিরকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর গোল হয়নি। ৩-২ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় মহমেডান।
ম্যাচ হেরে কলকাতা লীগ খেতাব রক্ষা করা তো কঠিন হলোই মোহনবাগানের পক্ষে, পাশাপাশি রক্ষণের যা দুরবস্থা, অবিলম্বে অবিশ্বাস্য উন্নতি না হলে কিবুর কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ বাড়বে বই কমবে না।
ছবি সৌজন্যে:- অজয় মজুমদার।
ছবি সৌজন্যে:- অজয় মজুমদার।
No comments:
Post a Comment