বর্ণময় ইডেনে রঙীন জয় নাইটদের । গণশক্তি - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

বর্ণময় ইডেনে রঙীন জয় নাইটদের । গণশক্তি

Share This

নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা, ১৩ই এপ্রিল — সবই যেন চমক। সুনীল নারিনের ওপেনিং, বলিউডি গানের সঙ্গে বাউল শিল্পীর নাচ! প্রথমটা সফল হলেও দ্বিতীয়টা ছন্দহীন।

চোখ ধাঁধানো আলো, ছোট্ট অনুষ্ঠানে শুরু হলো ইডেনে নাইটদের আই পি এল অভিযান। শেষটাতেও আলো থাকলো নাইট শিবিরেই। আট উইকেটের বড় জয় কলকাতার। ফিল্ডিংয়ে ডোবালেও ব্যাটে বলে ভালো পারফরম্যান্স সুনীল নারিনের।


রান তাড়া করতে নেমে গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে ওপেনিংয়ে সুনীল নারিন! চমকে যাওয়ার মতোই। আই পি এল-এ প্রথম। গত জানুয়ারিতে বিগ ব্যাশে ওপেন করেছিলেন নারিন। মেলবোর্ন রেনেগাডসের হয়ে ১৩ বলে ২১ রান করেছিলেন। গম্ভীরের মাথাতেও তাই নতুন পরিকল্পনা। বৃহস্পতিবার ওপেনিংয়ে নেমে দর্শকদের পাশাপাশি প্রতিপক্ষকেও চমকে দিলেন নারিন। ক্রিস লিন না থাকায় মনে করা হয়েছিলো, রবীন উত্থাপ্পাকে নিয়ে নামবেন গম্ভীর। আদতে তা হলো না। গম্ভীরকে যোগ্য সহায়তা করলেন নারিন। মাত্র ১৮ বলে ৩৭ রানে ফেরেন নারিন। মাঠ থেকে বেরোনোর সঙ্গে গ্যালারির সকলে উঠে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানান এই ক্যারিবীয় তারকাকে।

প্রথম হোম ম্যাচ। পেস সহায়ক পিচ। শিশিরের জন্য পরের দিকে ব্যাটিংয়ে সুবিধা। টসে জিতে নির্দ্ধিধায় ফিল্ডিং নিলেন গম্ভীর। দলে মোট তিনটি পরিবর্তন। লিনের জায়গায় কলিন ডে গ্র্যান্ডহোমের আই পি এল অভিষেক। কুলদীপ ও অঙ্কিত রাজপুতের জায়গায় যথাক্রমে পীযূষ চাওলা ও উমেশ যাদব। শুরু থেকেই ফিল্ডিংয়ে কে কে আর-এর সেই পুরানো রোগ। বাউন্ডারি লাইনে আলসেমিতে নিচু না হয়ে, পা দিয়ে বল আটকানোর চেষ্টায় ব্যর্থ পীযূষ চাওলা। গা-ছাড়া মনোভাব। দলের ফিল্ডিংয়ের মতোই জড়তা কাটাতে একটু সময় লাগলো উমেশ যাদবের। চলতি আই পি এল-এ প্রথম ম্যাচ উমেশের। প্রথম ওভারে দিলেন ১১ রান। ২.৫ ওভারে বোল্টের বোলিংয়ে প্রথম উইকেটের সুযোগ পেয়েছিলো কলকাতা। থার্ড ম্যানে সহজতম ক্যাচ মিস সুনীল নারিনের। মনন ভোরা তখন ১৭ রানে ব্যাট করছিলেন। সেটাই প্রথম এবং একমাত্র ক্যাচ মিস নয়। সুনীল নারিন এরপরও ক্যাচ মিস করেন। ভোরার ব্যাটে বড় রান না আসায় স্বস্তি। তবে বোলিংয়ে ভরসা দিলেন। ৪ ওভার বোলিং করে ১৯ রানে ১ উইকেট নারিনের খাতায়। পীযূষ চাওলা নিজের প্রথম ওভার শুরু করলেন ভোরাকে (২৮) বোল্ড করে। গত ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন। উইকেট নিয়ে বুঝিয়ে দিলেন সব পিচেই কার্যকরী হতে পারেন। প্রথম ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে এক উইকেট নিলেন পীযূষ।

পাঞ্জাবের ব্যাটিং লাইন আপ যথেষ্ট শক্তিশালী। হাসিম আমলা, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ডেভিড মিলার, সব বড় নাম। সকলেই শুরুটা দারুণ করলেন। বড় রান করতে ব্যর্থ। ব্যক্তিগত ৫ রানে ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ ছাড়েন উইকেটকিপার রবীন উত্থাপ্পা। ম্যাক্সওয়েলের ইনসাইড এজ, প্যাডে লেগে ক্যাচের সুযোগ। এক হাতে দায়সারা চেষ্টা করেছিলেন উত্থাপ্পা। বল হাতে লাগলেও জমাতে পারেননি। ম্যাচ জিতলেও এই ফিল্ডিং চাপে রাখতে বাধ্য নাইট রাইডার্সকে। মুম্বাইয়ে নাইটদের হারের অন্যতম কারণ ছিলো ফিল্ডিংই। উমেশের সৌজন্যে পাঞ্জাবের ইনিংস আরও বড় আকার নেয়নি। নিজের চতুর্থ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেন উমেশ। ১১ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। এই ওভারে তাঁর শিকার ডেভিড মিলার, ঋদ্ধিমান সাহা, অক্ষর প্যাটেল। নাইটশিবিরকে সাময়িক চাপে রেখেছিলেন ঘরের ছেলে ঋদ্ধিমান সাহা। পীযূষ চাওলার বলে লঙ অফে বিরাট ছয় মারেন। ১৭ বলে ২৫ রানে ঋদ্ধির দৌড় শেষ হয়। উমেশের বলের গতি বুঝতে পারেননি। মিড অফে দারুণ ক্যাচ নেন ক্রিস ওকস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করে পাঞ্জাব।

টি-২০ ক্রিকেটে কোনো রানই সুরক্ষিত নয়। পাঞ্জাবের স্কোর ভদ্রস্ত বলা যায়, কঠিন নয়। কলকাতা শুরু থেকেই যেভাবে ব্যাট করছিলো, এই স্কোর আরও সহজ মনে হচ্ছিলো। অযথা তাড়াহুড়ো না করেও দ্রুত রান তোলা যায়, গম্ভীর-উত্থাপ্পা সেটাই করলেন। কলকতা প্রথম ৫ ওভারে ৬০ রান করে। গম্ভীর-নারিনের ওপেনিং জুটিতে উঠলো ৭৬ রান। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৭৬ রান করে কেকেআর। পাওয়ার প্লে-তে এটাই কে কে আর-এর সর্বোচ্চ রান। মাত্র ৩৪ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন গম্ভীর। পুরো ইনিংসে কোনো ছয় মারলেন না! ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি অর্ধশতরানের রেকর্ড গম্ভীরের দখলে (৩৩টি)। গম্ভীর ধৈর্যশীল ব্যাটিং করলেও অযথা ঝুঁকি নিতে গিয়ে ফিরলেন উত্থাপ্পা। অধিনায়কের সঙ্গে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন মণীশ পান্ডে। ১৬.৩ ওভারে ছয় মেরে জেতালেন মণীশ। ১৬ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অধিনায়ক গম্ভীর ৪৯ বলে ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন। শনিবার কে কে আর-এর পরের ম্যাচ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। তৃতীয় ম্যাচে, দ্বিতীয় জয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরলো নাইট শিবিরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাঞ্জাব- ১৭০/৯ (২০ ওভার) ম্যাক্সওয়েল ২৫, ঋদ্ধিমান ২৫, উমেশ ৪/৩৩, ১/১৯।

কলকাতা- ১৭১/২ (১৬.২) গম্ভীর অপরাজিত ৭২, নারিন ৩৭, বরুণ ১/২৩।

কলকাতা ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচের সেরা- সুনীল নারিন।

No comments:

Post a Comment

Pages