তারকার গল্প । ইউসেবিও - দীপ্তাশিস দাসগুপ্ত - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

তারকার গল্প । ইউসেবিও - দীপ্তাশিস দাসগুপ্ত

Share This



আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ২০১৮ বিশ্বকাপ আরম্ভ হতে। আবার সারা পৃথিবী আক্রান্ত হয়ে পড়বে ফুটবল জ্বরে। ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গেছে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে কে চ্যাম্পিয়ন হবে তা নিয়ে। এই বিশ্বকাপ বহু তারকার জন্ম দিয়েছে। যাদের খেলা সারা পৃথিবীর আপামর ফুটবল প্রিয় মানুষ কে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছে। তাঁদেরই একজন হলেন Eusebio da Silva Ferreira অথবা Eusebio। 



জন্ম ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে জানুয়ারী পর্তুগালের Lourenço Marques এ, যাকে Portuguese Mozambique বলা হয়। খুব ছোট থেকেই চারপাশের মানুষদের মুগ্ধ করে রাখতেন পায়ের যাদুতে। প্রথম খেলা আরম্ভ করেন Os Brasileiros নামক একটি অপেশাদার দলের হয়ে। প্রথমে বেনফিকার হয়ে ট্রায়াল দিয়ে ব্যর্থ হন কিন্তু শেষ মেষ Sporting Clube de Lourenço Marques এ সুযোগ পান। এরপর ১৮ বছর বয়েসে বেনফিকাতে চলে যান। সেইসময় বেনফিকার কর্ম কর্তারা তার গতি দেখে মুগ্ধ হন। ১০০ মিটার দৌড়াতে পারতেন ১১ সেকন্ড এ। মূলত ডান পায়ের ফুটবলার হলেও বা দিকেও খেলতে পারতেন সমান স্বচ্ছন্দে। এরপর ধীরে ধীরে তার প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে, ও সারা পৃথিবী তে তিনি বিপক্ষ ফুটবল দল গুলির ত্রাস হয়ে ওঠেন।পরবর্তীকালে নিজের ফুটবল জীবনের ২২ বছরের ১৫ বছর তিনি বেনফিকার হয়ে খেলেন। ১১ বার বেনফিকা কে পর্তুগালের Primeira Liga তে চ্যাম্পিয়ন করান। নিজে ৭ বার সেরা গোলদাতা হন Primeira Liga তে। এছাড়াও বেনফিকা কে ৫ বার Portuguese Cup, ১ বার European Cup জেতান। মোট বেনফিকার জার্সি তে তিনি ৭১৫ টি খেলাতে ৭২৭ ফি গোল করেন। তাছাড়াও পর্তুগালের জাতীয় দলের হয়ে ৬৪ টি খেলাতে ৪১ টি গোল করেন। 



১৯৬৬ জুলে রিমে বিশ্বকাপে তাঁর খেলা এখনও মিথ হয়ে আছে। বিশেষত উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর হ্যাট্রিক সহ চার গোলের কাহিনী আজ লোকের মুখে মুখে ফেরে। সেই বিশ্বকাপ এ পর্তুগাল মূলত তাঁর নৈপুণ্যের জোরেই তৃতীয় স্থান অধিকার করে, ও তিনি সোনার বল পান ৯ টি গোল করে। সেই বিশ্বকাপ এ ব্রোঞ্জ বল ও পান তিনি। এছাড়াও ১৯৬৫ তে তিনি Ballon D'or খেতাব জেতেন। কিন্তু শুধুমাত্র পরিসংখ্যান দিয়ে এই মহান ফুটবলার টিকে বিচার করা যাবে না। অসাধারণ গতি, টেকনিক, ফিটনেস ও ডান পায়ে জোরাল শট থাকার দরুন প্রচুর গোল করতেন ও করাতেন। তাঁর খেলা আপামর ফুটবল প্রেমীর মন জিতে নিয়েছিল।যখন বল নিয়ে ছুটতেন, মনে হত যেন প্রচণ্ড বেগে বাঘ তার শিকার কে তাড়া করেছে। নিখুঁত দক্ষতাতে কাটাতে পারতেন একাধিক খেলোয়াড় কে। তাঁর গোলার মত শট যখন আছরে পড়ত বিপক্ষের জালে, তখন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকত গোটা ফুটবল বিশ্ব। এছাড়াও হেডেও ছিলেন সমান দক্ষ। এক অর্থে 'complete footballer' বলাই যেতে পারে তাঁকে। যে কারণে ফুটবল প্রেমীরা তাঁকে ভালবেসে কালো মুক্ত, কালো পান্থার, ও রেই ইত্যাদি নামে ডাকতেন। ২০১৪ র ৫ই জানুয়ারি সারা ফুটবল বিশ্ব কে শোক স্তব্ধ করে দিয়ে তিনি পরলোক গমন করেন।

No comments:

Post a Comment

Pages