মোহন বাগানের কমিটি থেকে তৃণমূল মন্ত্রীরা নিজেদের সরিয়ে নিলেন । বর্তমান - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

মোহন বাগানের কমিটি থেকে তৃণমূল মন্ত্রীরা নিজেদের সরিয়ে নিলেন । বর্তমান

Share This

নাম ঘোষণার দেড় ঘন্টার মধ্যেই নাটক


নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: মোহন বাগানের পদত্যাগ-খেলায় নাটকীয় মোড়। সবুজ-মেরুনের বর্তমান কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে আর মাত্র ১২ দিন বাকি। যদিও মোহন বাগান সংবিধানে বলা আছে আরও ছয় মাস এই কমিটি থাকতে পারে। এই সন্ধিক্ষণে গত কয়েক সপ্তাহে ১৬ জন কমিটি মেম্বারদের গণ ইস্তফার মাঝেও মোহন বাগান সংবিধান মেনে ন’জন নির্বাচিত (আরও তিনজন কো-অপ্ট মেম্বার উপস্থিত ছিলেন) সদস্যর উপস্থিতিতে দলের সাম্প্রতিক বিরোধীদের মুখে ছাই দিয়ে নির্বিঘ্নে মোহন বাগান কর্মসমিতির সদস্যরা মিটিং করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন। শুক্রবার আইনের ফাঁক গলে মোহন বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র চার জন সহ সভাপতি মনোনীত করেন। এই চারজনের মধ্যে ছিলেন রাজ্য মন্ত্রীসভার ক্যাবিনেট মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও অরূপ রায়। কিন্তু ঘোষণার দেড় ঘণ্টার মধ্যেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং অরূপ রায় মোহন বাগান সচিবের সহ সভাপতি হওয়ার অফার সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন,‘ আমাকে তিন দিন আগে অঞ্জন মিত্র ফোন করে সহ সভাপতির পদ নিতে অনুরোধ করেন। শুক্রবার আমার নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আমি তৃণমূল কংগ্রেস করি, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দায়িত্বে আছি। খাদ্য দপ্তরও আমার হাতে। এরপর ডামাডোলের মধ্যে আমার পক্ষে আর মোহন বাগানের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়। আমি এই ঝামেলার মধ্যে ঢুকতেও চাই না।’



অরূপ রায়ের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর একপ্রস্থ কথা হয়। অরূপবাবু বলেন,‘আমি মোহন বাগানের দায়িত্ব নিচ্ছি না। দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৃণমূল নেতৃত্বের অনুমোদনও চাইছি না। বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখার্জির বাড়িতে গিয়েছিলেন মোহন বাগান সচিব। তাঁর সঙ্গে ইতিবাচক কথাবার্তাও হয় সচিবের। তবে সভাপতির পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তার সূত্রে তিনি নিজেকে শেষ মুহূর্তে সরিয়ে নেন। আসলে সহ সচিবের সঙ্গে নবান্ন যোগাযোগ বেশ ভালো। তাই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অরূপ রায় ও সুব্রত মুখার্জি কোনও ঝুঁকি নিলেন না। মোহন বাগানের অপর দুই সহ সভাপতি হলেন জেলা জাজ মুরারি মোহন ঘোষ এবং প্রাক্তন ফুটবল সচিব রাধেশ্যাম আগরওয়াল। কো-অপ্ট সদস্য হিসাবে আসা তিন সদস্যর মধ্যে আছেন উত্তর কলকাতার বিশিষ্ট তৃণমূল নেতা তথা সাংসদ শান্তনু সেন। উত্তরের কলকাতা নামে সংগঠন করে শ্যামবাজার- বাগবাজার, আহিরিটোলা, শোভাবাজার, হাতিবাগানের বিরাট সংখ্যক ভোট কুক্ষিগত করতে সচেষ্ট সহ সচিব- অর্থ সচিব। তাঁদের কাউন্টার করতে শান্তনু সেনকে কমিটিতে নিয়েছেন সচিব। তবে তৃণমূলের মন্ত্রীদের মতো সাংসদ শান্তনু সেন সবুজ মেরুনের মঞ্চ থেকে নিজেকে এখনই সরিয়ে নিতে চাননি। তিনি বলেন,‘আমি মোহন বাগানের অন্ধ সমর্থক। দীর্ঘ দিনের সদস্য। সঙ্কটের মুহূর্তে ক্লাবের জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগবে। তবে দিদির নির্দেশে আমি পুরুলিয়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ভোটের পর কলকাতায় ফিরে দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’ প্রশ্ন হল, লিখিত সম্মতির আগেই মোহন বাগান সচিব কেন এই সব হাইপ্রোফাইল রাজনৈতিক নেতাদের নাম ঘোষণা করতে গেলেন।



সচিব বলেন,‘ক্লাবের আর্থিক সঙ্কট নিরসনে কর্মসমিতির দুই সদস্য শৈলেন ঘোষ, শুভাশিস পালদের নিয়ে বিশেষ কমিটি করে দিয়েছি। পাঁচ সদস্যর কমিটি ওই ব্যাপারটি দেখবে। ৩১ মে’র মধ্যে ফুটবলারদের পেমেন্ট না মেটালে এএফসি লাইসেন্স পাওয়া যাবে না। তবে আমি আশাবাদী ৩১ মে’র মধ্যে ওদের পেমেন্ট মেটানো যাবে।’ সদ্য সমাপ্ত মরশুমে স্পনসরশিপ অর্থ বাকি আছে একটি সংস্থার। সেই সংস্থার মালিক হওয়ার সূত্রেই সহ সচিব, অর্থ সচিবের মতোই সভাপতির ছোট পুত্রের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হল না। সচিব এই ব্যাপারে বলেন, ‘আমি সভাপতি পদে টুটুকেই (স্বপনসাধন বসু) চাই। তাই সভাপতির পদ পূরণের জন্য কোনও চেষ্টা করিনি। ও কলকাতায় ফিরছে। ফের কথা বলব। বারবার বলা হচ্ছে আমি অসুস্থ। তাই পদত্যাগ করতে হবে। আমার প্রশ্ন, অসুস্থ হলে বাবা- মাকে বাড়িতে বের করে দেওয়া হয় কি? দেখতে হবে আমার মাথা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। সেটা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন। এত চাপের মধ্যেও কোরাম করে সভা করলাম। আমি মোহন বাগান সচিব থাকব কিনা তা ঠিক করবে সদস্যরা। আমার প্যানেল ভোটে লড়বে। তখনই বোঝা যাবে কার কত ভোট আছে।’ 



সচিবের গলায় তখন চ্যালেঞ্জের সুর। তবে রাতে দুই মন্ত্রীর সরে যাওয়ার কথা শুনে তিনি কিছুটা হতাশ। সচিব জানান,‘আগামী সপ্তাহে ফের কর্মসমিতির সভা হবে। সেখানে অ্যাকাউন্টস পাশ করিয়ে বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হবে। ক্রিকেট বিভাগের আর্থিক সঙ্কট মেটাতে হবে ওই বিভাগ যাঁরা চালান তাঁদেরই। কারণ সিএবি’র অনুদান তাঁরা পান। ফুটবল বিভাগ সহ সচিব-অর্থ সচিব চালান। ওদের উচিত ছিল বকেয়া মিটিয়ে ইস্তফা দেওয়া। যা ওরা করেনি। কাজটি হয়তো ঠিক হয়নি। সদস্যরাই বিচার করবেন। ২৫ জনের তালিকা নিয়েই টিম হবে।’

No comments:

Post a Comment

Pages