নয়াদিল্লি, ২৮ এপ্রিল: অবশেষে ঘুম ভাঙল বিসিসিআইয়ের। ভারতীয় টেস্ট দলের প্রাক্তন ওপেনার একদা বিশ্বরেকর্ডধারী পঙ্কজ রায়কে মরণোত্তর সিকে নাইডু জীবনকৃতি সম্মানে ভূষিত করবে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। তিন সদস্যের কমিটি পঙ্কজ রায়ের পাশাপাশি অংশুমান গায়কোয়াড়, ভারতীয় মহিলা দলের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন তথা বোর্ডের ক্রিকেট প্রশাসক কমিটির অন্যতম সদস্য ডায়ানা এডুলজি এবং সুধা সাহার নামও জীবনকৃতি সম্মানের জন্য প্রস্তাব করেছে। বিশেষ সম্মান জানানে হবে আব্বাস আলি বেগ, নরেন তামানে ও বুধি কুন্দরনকে।
পঙ্কজ রায় ৪৩টি টেস্ট খেলেছেন। ৭৯টি ইনিংসে তাঁর মোট রান ২৪৪২। বাংলার এই কিবদন্তি ক্রিকেটারের টেস্টে সর্বাধিক রান ১৭৪। তাঁর ব্যাটিং গড় ৩২.৫৬। পাঁচটি শতরান ও ন’টি অর্ধ-শতরানের মালিক পঙ্কজ রায়। ১৮৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তিনি ১১৮৬৮ রান করেছিলেন। ১৯৫১ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দিল্লিতে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল পঙ্কজ রায়ের। ১৯৬০ সালে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন মুম্বইয়ে। একটি মাত্র টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পঙ্কজ রায়। ওপেনিং জুটিতে বিনু মানকড়ের সঙ্গে পঙ্কজ রায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৫৫-৫৬ মরশুমে ৪১৩ রান যোগ করেছিলেন। যা ২০০৮ সাল পর্যন্ত অটুট ছিল। বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্তে খুশি বাংলার ক্রিকেট মহল। পঙ্কজ রায়ের ছেলে প্রণব জানিয়েছেন, ‘বাবা বরাবরই স্বীকৃতি পেয়েছেন বিলম্বে। দেরিতে হলেও শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বিসিসিআইয়ের। এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’
তবে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না এডুলজির। অনেকেই বলছেন, প্রশাসক কমিটির পদে থেকে কি করে জীবনকৃতি সম্মান পেতে পারেন তিনি? এই ব্যাপারে ক্রিকেট প্রশাসক কমিটির প্রধান বিনোদ রাইকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তিন সদস্যের প্যানেলের প্রধান এন রাম। আমি জানতাম না প্যানেল কাদের নাম প্রস্তাব করেছে। এই ব্যাপারটি আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।’ বোর্ডের অস্থায়ী সচিব অমিতাভ চৌধুরির সঙ্গে বার বার ক্রিকেট প্রশাসক কমিটির বিবাদ সামনে এসেছে। যদিও ডায়ানা এডুলজির জীবনকৃতি সম্মান পাওয়া কি স্বার্থের সংঘাতের আওতায় পড়ে, এই প্রশ্নের জবাবে অমিতাভ চৌধুরি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কমিটির ওপর বাইরের কারও প্রভাব রয়েছে। তাই এক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন ওঠে না।’ গতবছর ডায়ানা এডুলজি সহ তিন সদস্যের প্যানেল শান্তা রঙ্গস্বামীর নাম জীবনকৃতি সম্মানের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআইয়ের এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, ‘ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে ডায়ানা এডুলজির অবদান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গা নেই। শান্তার পর উনিই এই পুরস্কার পাওয়ার দাবিদার ছিলেন। কিন্তু ডায়ানা এডুলজি বর্তমানে সিওএ’র সদস্য। এক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। একই রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন রজার বিন্নি। তিনি তখন জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলী সদস্য ছিলেন। তাঁর ছেলে স্টুয়ার্ট বিন্নি ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ায় রজার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিয়েছিলেন।’
No comments:
Post a Comment