মেসির আলো ঢেকে দিল রক্ষণের অন্ধকার । বর্তমান - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

মেসির আলো ঢেকে দিল রক্ষণের অন্ধকার । বর্তমান

Share This


বার্সেলোনা-৩ :রিয়াল সোসিদাদ-২

(মেসি-২, পাকো আলকাসের)(উমতিতি-আত্মঘাতী, প্রিয়েতো)

বার্সেলোনা, ১৬ এপ্রিল: বুধবার সন্ধ্যায় ন্যু ক্যাম্পে জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। তিন গোলের ব্যবধান ঘোচাতে না পারলে সেদিনই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেবে বার্সেলোনা। তার আগে শনিবার লা লিগার ম্যাচে রিয়াল সোসিদাদের বিরুদ্ধে ফুটবলারদের পরখ করে নেওয়াই লক্ষ্য ছিল কোচ লুই এনরিকের। পারফরম্যান্স এবং ফল দেখে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মেসি এই দলের আলো হলে রক্ষণ অন্ধকারে ভরা। জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে ম্যাচের ফল তাই শুধু লাতিন আমেরিকান আপফ্রন্ট নয়, রক্ষণের উপরেও নির্ভরশীল।
শনিবার স্পোর্টিং গিয়নকে ৩-২ গোলে হারিয়ে লিগ শীর্ষে নিজেদের অবস্থান মজবুত করে রিয়াল মাদ্রিদ (৩১ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট)। তাই রিয়াল সোসিদাদের বিরুদ্ধে পয়েন্ট নষ্ট করলে চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড় থেকে আরও খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হত বার্সেলোনাকে। লুই এনরিকের সৌভাগ্য, তিনি পেয়েছেন মেসির মতো ম্যাচ-উইনারকে। এই ম্যাচে দু’টি গোল করা ছাড়াও পাকো আলকাসেরের সামনে লক্ষ্যভেদের সুযোগ গড়ে দেন এলএমটেন। উল্লেখ্য, ম্যাচের পাঁচটি গোলই প্রথমার্ধে হয়েছে। 
কার্ড সমস্যায় শনিবার নেইমারের সার্ভিস পায়নি বার্সা। কোচ এনরিক দল সাজিয়েছিলেন ৪-৩-৩ ফর্মেশনে। গোলে আন্দ্রে টার স্টেগেন। রক্ষণে সের্গি রবার্তো, জেরার্ড পিকে, উমতিতি ও জর্ডি আলবা। মাঝমাঠে আন্দ্রে গোমেস, সের্গিও বুস্কেতস ও র‌্যাকিটিচ। আপফ্রন্টে মেসি ও সুয়ারেজের পাশে পাকো আলকাসের। 
ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার চেষ্টা করে। তবে বার্সেলোনার আধিপত্য ছিল বেশি। ১৭ মিনিটে সুয়ারেজের পাস বক্সের বাইরে খুঁজে নেয় মেসিকে। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া আর্জেন্তাইন মহাতারকাটির শট আছড়ে পড়ে রিয়াল সোসিদাদের জালে (১-০)। এর আগে বার্সার সুয়ারেজ এবং সোসিদাদের ইউরি সহজ সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। ৩৭ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় লুই এনরিক-ব্রিগেড। সুয়ারেজের শট বিপক্ষ গোলরক্ষকের পায়ে লেগে ফিরে এলে মেসি তা কোনওক্রমে জালে ঠেলে দেন (২-০)। এই গোলের পর বার্সেলোনার সমর্থকদের মনে হয়েছিল, বিপক্ষকে বড় ব্যবধানে হারাবেন মেসিরা। কিন্তু ভঙ্গুর রক্ষণের ফলে তা সম্ভব হয়নি। ৪২ মিনিটে প্রথম গোল পায় সোসিদাদ। বক্সের ভিতর থেকে নেওয়া ইনিগো মার্তিনেজের জোরালো শট গোললাইনে দাঁড়িয়ে থাকা উমতিতির মাথায় লেগে জালে জড়ায় (২-১)। মিনিট দুয়েক পরেই বার্সেলোনার তৃতীয় গোল। মেসির বুদ্ধিদীপ্ত থ্রু ধরে দুরন্ত ফিনিশ করেন পাকো আলকাসের (৩-১)। প্রথমার্ধের সংযোজিত সময়ে প্রিয়েতোর গোল আবার বার্সা রক্ষণের দুর্বলতা প্রকট করে (৩-২)। 
বিরতির পর দুই দলই রক্ষণ সংগঠন সুদৃঢ় করতে মনোযোগী হয়। তাই এই অর্ধে কোনও গোল হয়নি। তবে সুযোগ বেশি পেয়েছে বার্সেলোনাই। মেসি ও সুয়ারেজ, দু’জনেই দু’বার সুবিধাজনক অবস্থায় বল পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। ৬৯ মিনিটে আন্দ্রে গোমেসের পরিবর্তে অভিজ্ঞ আন্দ্রে ইনিয়েস্তা নামার পর বার্সেলোনার মাঝমাঠ আরও সক্রিয় হয়। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলি অবশ্য আন্দ্রে গোমেসকে প্রথম একাদশে রাখার জন্য এনরিকের সমালোচনা করেছে। ম্যাচের শেষে এই প্রসঙ্গে বার্সা কোচ বলেন, ‘ইনিয়েস্তা গ্রেট ফুটবলার। ওর পরিবর্ত হিসাবে আন্দ্রেকে দেখা বা ভাবা উচিত নয়। খেলতে খেলতেই আরও পরিণত হবে আন্দ্রে।’
দু’গোল হজম করা প্রসঙ্গে এনরিকের বক্তব্য, ‘রিয়াল সোসিদাদ অত্যন্ত শক্তিশালী দল। প্রিতো-উইলিয়ানদের মতো বিপজ্জনক ফুটবলার রয়েছে ওদের দলে। প্রথমার্ধের শেষদিকে উমতিতি-পিকেদের মনঃসংযোগের অভাব ঘটেছিল। তাই প্রতিপক্ষ দু’টি গোল দিয়েছে। বিরতির পর অবশ্য ডিফেন্ডাররা নিজেদের শুধরে নিতে পেরেছে। তাই জুভেন্তাস ম্যাচের আগে আমি যথেষ্ট আশাবাদী।’ রিয়াল সোসিদাদকে হারিয়ে ৩২ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে বার্সেলোনা। অনেকেই মনে করছেন, এল ক্লাসিকো জিততে না পারলে মেসিদের পক্ষে লা লিগা খেতাব পাওয়া শুধু কঠিনই নয়, প্রায় অসম্ভবও।

No comments:

Post a Comment

Pages