মোহনবাগানের ৪ গোলে জেতা উচিত:‌ সুব্রত - অগ্নি পান্ডে | আজকাল - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

মোহনবাগানের ৪ গোলে জেতা উচিত:‌ সুব্রত - অগ্নি পান্ডে | আজকাল

Share This

শরীর ভাল নেই। ঠান্ডা–গরমে আক্রান্ত। কিন্তু তাঁর প্রিয় ক্লাবের কথা উঠতেই তিনি েযন চাঙ্গা, চনমনে। দু–দু’বার আই লিগ দিয়েছেন সবুজ–মেরুনকে। এবার তারই পথ ধরে এক অনুজ আবার মোহনবাগানকে দু’বার আই লিগ জয়ের স্বাদ দিতে চলেছেন। ২০০০ সালে মোহনবাগানকে দ্বিতীয়বার আই লিগ েজতানো এবং ২০০২ সালে আবারও পালতোলা নৌকায় আই লিগ খেতাব তুলে দেওয়া সুব্রত ভট্টাচার্য অগ্রিম অভিনন্দন জানিয়ে রাখলেন বাগানের বর্তমান কোচ সঞ্জয় সেনকে।

‘আমি বিশ্বাস করি যদি মোহনবাগান নিজের খেলা খেলতে পারে, তা হলে আইজলের মাটিতে আইজলের মতো দলকে ৪ গোলে হারানোর ক্ষমতা রাখে। ওটা কোনও দলই নয়। সঞ্জয়ের কোচিংয়ে মোহনবাগান যা ফুটবল খেলছে, তাতে আইজলকে হারানোটা কোনও ব্যাপার নয়। যে কোনও দিন এই মোহনবাগান পারে আইজলকে হারাতে।’ মোহনবাগানের ঘরের ছেলে বাবলু নিশ্চিত, শনিবারই আই লিগ খেতাব ময়দানের তাঁবুতে এসে যাবে। অপেক্ষা করতে হবে না শেষ ম্যাচের জন্য।
মোহনবাগানের আই লিগের খেতাব জয়ের কথা ভাবতে ভাবতে স্মৃতির সরণি ধরে হাঁটতে শুরু করলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। ফিরে গেলেন সেই ’৯৯–২০০০ মরশুমে কোচ হিসেবে প্রথমবার জাতীয় লিগ জয়ের মুহূর্তে। গোয়ার মাটিতে চার্চিলের বিরুদ্ধে সেই ঐতিহাসিক ম্যাচে। ‘তখন চার্চিলের কী দল! ইয়াকুবু, জর্জ এক্কা নিেয় চার্চিল। আমাদের ওই ম্যাচটি জিততেই হত। আমি দেখলাম কিছুতেই গোল পাচ্ছি না। তখন আমার ডিফেন্ডার সালিউকে ওপরে তুলে দিয়েছিলাম। কর্নার থেকে হেড করে গোল করার জন্য। শেষ পর্যন্ত সালিউ কিন্তু জয়সূচক গোলটি করেছিল। ভুলিনি, আমরা ১ গোলে জিতছি বলে রেফারি গোয়ার মাটিতে ১৮ মিনিট ইনজুরি টাইম খেলিয়েছিল! যদি চার্চিল গোল শোধ করতে পারে। ভাবুন, কী পরিস্থিতিতে চ্যাম্পিয়ন হতে হয়েছিল। আমি জীবনে কোনওদিন ভুলব না বাঙালি ফুটবলারদের দাপট। আহা, দেবজিতের গোললাইন সেভ। দুলাল বিশ্বাসের দুরন্ত ফুটবল। ছোটখাটো চেহারা নিয়ে বাসুদেব মণ্ডলের মাঝমাঠ দাপিয়ে বেড়ানো।’
২০০১–০২ মরশুমে আবার জাতীয় লিগ মোহনবাগানকে এনে দেন সেই সুব্রত ভট্টাচার্য। কোচ হিসেবে দ্বিতীয়বার। আর মোহনবাগানের জন্য তৃতীয়বার। সুব্রত নস্টালজিক। ‘সেবার আমরা দুটো ম্যাচ বাকি থাকতেই জাতীয় লিগ জিতেছিলাম। কিন্তু বড় ম্যাচ হেরে গিয়েছিলাম। বারবার ফুটবলারদের বলেছিলাম, বড় ম্যাচ হালকাভাবে নিস না। কিন্তু দুটো ম্যাচ আগেই জাতীয় লিগ জয় আত্মতুষ্টি এনে দিয়েছিল। বড় ম্যাচ হারা উচিত হয়নি। ওটা নিয়ে একটা খচখচানি থেকে গেছে। সেবার আমার দলে বিদেশি ফুটবলার বলতে টগবগে ব্যারেটো, আমাউরি এবং ব্রাজিলীয় স্যান্টোস। সঙ্গে বাসু, দুলাল, দেবজিৎরা। মনে আছে, সেবার আমরা বোধহয় ৬টা অন্য প্রতিযোগিতাও জিতেছিলাম। ফেড কাপ, ডুরান্ড, রোভার্স, বরদলুই— কী সব প্রতিযোগিতা জাতীয় লিগের পাশাপাশি খেলতে হত! আর সব প্রতিযোগিতা জেতার জন্য ভয়ঙ্কর চাপ।’ একটু দম নিলেন সুব্রত। ‘এখন আর প্রতিযোগিতা কই? ফুটবলটা তো তুলে দিচ্ছে। প্রতিযোগিতা বলতে কলকাতা লিগ আর তার পর আই লিগ। আমার কোচিংয়ের সময়ে অমানুষিক চাপ ছিল। তার পর জাতীয় লিগে জয়। কাজটা সত্যি কঠিন কাজ ছিল সে সময়ে। সে সময়ে ফুটবল নিয়ে কী উন্মাদনা! গোয়ায় যেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, সেবার মাঠে প্রায় লাখখানেক দর্শক! এখন তো মাঠে লোকই আসে না খেলা দেখতে। এখনও রয়েছে, তবে সংখ্যায় কম। যেমন সনি নর্ডির মতো ফুটবলার। সে জন্য হয়ত মাঠে দর্শক সংখ্যা কমে গেছে।’
অতীতের কথা বললেও তাঁর প্রিয় দলের জন্য সামনে তাকাতে চান সুব্রত। তাকাতে চান মিজো পাহাড়ে। যেখানে তাঁর প্রিয় দল ভারতসেরার খেতাবের পতাকা তুলতে পারে। বিশ্বাস থেকেই তাই বারবার বলতে চাইলেন, ‘ধুর, আইজল কোনও দলই নয়। মোহনবাগানের ৪ গোলে জেতা উচিত। মোহনবাগান যা খেলছে, তা দেখে মনে হচ্ছে আইজলকে দাঁড় করিয়ে হারিয়ে খেতাব জিতে ফিরে আসা উচিত কলকাতায়। সেই অপেক্ষায় আমি রয়েছি লাখ লাখ মোহনবাগানপ্রেমীর সঙ্গে।’

No comments:

Post a Comment

Pages