আজকালের প্রতিবেদন: স্পনসর ইউ বি গ্রুপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের বৈঠকে ক্লাবের আর্থিক সমস্যার সমাধান তো হয়নি, উল্টে বেড়েছে। কারণ ভাল বাজেটের দল গড়তে যেখানে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা দরকার, সেখানে গত মরশুমে ইউবি–র থেকে মিলেছিল সাড়ে ৩ কোটি টাকা। বাকিটা কো–স্পনসরশিপ থেকে জোগাড় করেছিলেন লাল–হলুদ কর্তারা। এবার ইউবি–র প্রতিনিধিরা সাফ বলে দিয়েছেন, দেড় কোটির বেশি দিতে পারবে না। কারণ, তাঁরা দিনের পর দিন বেশি টাকা দিয়েও ইস্টবেঙ্গলের থেকে কোনও সাফল্য পাননি। সেখানে নামমাত্র বাজেটে দল গড়ে আইজল, মিনার্ভার মতো দল আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল যত দিন না আইএসএল খেলছে, তত দিন ইউবি কর্তারা বাজেট বাড়ানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন না আই লিগ খেলার জন্য।
এই মনোভাব পছন্দ নয় ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। তাঁরা বাজেট বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। অনন্ত গত মরশুমের টাকাটাও যাতে পাওয়া যায়, তার ওপর জোর দিয়েছেন। ইউবি–র কর্তারা এ ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা দেননি। তাঁরা বেঙ্গালুরু ফিরে এ নিয়ে ভাবার সময় চেয়েছেন। চিঠি দিয়ে তাঁদের চূড়ান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন। সেই চিঠি এখনও আসেনি ইস্টবেঙ্গলের কাছে। আগামী সপ্তাহের যে কোনও সময় সেই চিঠি আসতে পারে। সেটা ইস্টবেঙ্গলের মনমতো না হলে ইউবি–র সঙ্গে স্পনসরশিপের বিচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে। সে–সম্ভাবনা প্রবল। তবে এই বিচ্ছেদ কার্যকরী হতে সময় লাগবে আইনি জটিলতা মেটাতে। অবশ্য বিচ্ছেদের বিষয়টা পাকা হয়ে গেলে নতুন টাইটেল স্পনসর খুঁজতে বেরোবেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা খোলা মনে।
এতদিন অনেক কোম্পানির সঙ্গে কথা বললেও, সেটা এগোয়নি কিংফিশার সঙ্গে থাকায়। ইস্টবেঙ্গলের এক শীর্ষকর্তা ইতিমধ্যে মুম্বই ঘুরে এসেছেন স্পনসরের খোঁজে। ওএনজিসি ছাড়াও এক নামী মোবাইল কোম্পানির সঙ্গে কথাও হয়েছে। তবে কোনও কিছু এখনও পাকা নয়। তাই যত দিন না টাকার জোগাড় হচ্ছে, তত দিন দল গঠনের ব্যাপারে জোর দেওয়া হলেও অন্যান্য কয়েকটি বিষয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ধীরে চলো নীতিতেই বিশ্বাস রাখছেন। গুরত্বপূর্ণ পদে থাকা এক ইস্টবেঙ্গল কর্তা জানালেন, টাকার সমস্যা থাকায় কলকাতা লিগে ভাল করতে যতটা শক্তিশালী দল গড়লে চলে, সেটাই করা হবে। দুই থেকে তিন বিদেশি নিয়ে কাজ চালালেই হল। সিনিয়র কিছু দেশি ফুটবলারের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের অ্যাকাডেমির ফুটবলারদের রাখার ভাবনাচিন্তা চলছে।
টিডি সুভাষ ভৌমিক তো বলেই দিয়েছেন, কলকাতা লিগ নয়, তাঁর আসল লক্ষ্য আই লিগ জেতা। তাই আই লিগের আগে টাকা জোগাড় করে পুরো শক্তির দল গড়ার পথে হাঁটার পরিকল্পনা কর্তাদের। একই কারণে এই মুহূর্তে কোচ নিয়োগের ব্যাপারে কোনও তাড়াহুড়ো করতে নারাজ তাঁরা। আই লিগের আগে ‘এ’ লাইসেন্স কোচের দরকার নেই। এখন কোনও কোচ নেওয়া মানে তাঁর মাইনে গুনতে হবে। এর অর্থ, বাস্তব যদি শেষপর্যন্ত কোচ হনও, তাহলে তাঁকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের মাথায় অন্য ভাবনাও আছে। তাঁরা টিডি সুভাষের সঙ্গে প্রো–লাইসেন্সধারী নামী কোচকে জুড়ে দিতে পারেন আই লিগের ঠিক আগে, ভবিষ্যতে আইএসএলে খেলার কথা মাথায় রেখে।
No comments:
Post a Comment