আজকালের প্রতিবেদন- বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি মর্মাহত। দুই গোষ্ঠীর দলাদলিতে মোহনবাগান ক্লাব যে ডামাডোলের মধ্যে দিয়ে চলেছে, সেটা যেন কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না কম্পটন দত্ত। পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন, ‘মোহনবাগান ক্লাবের সদস্য হিসেবে এটা কখনওই কাম্য নয়। চাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যে কোনও গোষ্ঠীর কমিটি স্থায়ীভাবে দায়িত্বে আসুক, তাঁরাই ক্লাব চালাক।’
দুই পক্ষের দলাদলিতে ক্লাব যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে মোহনবাগানের ঐতিহ্য কালিমালিপ্ত হচ্ছে বলেই মনে করছেন কম্পটন। তাঁর কথায়, ‘এখন যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ক্লাব যাচ্ছে, তাতে মনে করি মোহনবাগান ক্লাব লাঞ্ছিত হচ্ছে। যা চলছে তাতে মোহনবাগান ক্লাবের গরিমা, ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। এটা কখনই কাম্য নয়। আমাদের কাছে মোহনবাগান ক্লাব মায়ের মতো। ফলে এই সম্মানহানি আমারও গায়ে লাগছে। নিশ্চয়ই অন্য সদস্যদেরও একই অবস্থা। মায়ের সম্মানহানি হলে, সেটা তো সন্তানদের গায়ে লাগবেই। খবরের কাগজে, টেলিভিশন চ্যােনলে একে অন্যের বিরুদ্ধে মন্তব্য করছে। যেভাবে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি চলছে, তাতে সমাজের কাছে তো মোেটই ভাল বার্তা যাচ্ছে না। চাইব যারাই দায়িত্বে আসুক, ক্লাব যেন এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত বেরিেয় আসে।’
পরিস্থিতি যে জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে, তাতে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটবে এমনটা আর মনে হচ্ছে না কম্পটনের। বরং তিনি নির্বাচনেই এই যুদ্ধের ইতি দেখতে পাচ্ছেন। বাগানের টেকনিক্যাল কমিটির এই সদস্যের কথায়, ‘যে পরিস্থিতিতে ক্লাব চলে গেছে বা যেভাবে দুই গোষ্ঠীর দলবাজি চলছে, তাতে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনও পথ দেখতে পাচ্ছি না। সমঝোতার যে কথা হচ্ছিল বা শোনা যাচ্ছিল, সেই বিকল্প আর আছে বলে মনে হয় না। তবে, নির্বাচনের মাধ্যমে যাঁরাই আসুক, তাঁরা সুষ্ঠুভাবে ক্লাব পরিচালনা করুন, সেটাই চাই।’ আরও যোগ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হলে তো কোনও সমস্যা নেই। টুটুদা, অঞ্জনদা, দেবাশিস, সৃঞ্জয়— এঁরা তো গতবার নির্বাচন জিতেই দায়িত্বে এসেছিলেন। তারপর ভেতরে যে সমস্যাই হয়ে থাক না কেন, সেটা মনোমালিন্যের জায়গায় চলে গেছে, অন্য কথা। দেশের সরকারকেও তো কাজ চালাতে গিয়েও আমরা এরকম পরিস্থিতির মুখে পড়তে দেখেছি। দিল্লিতে কতবার এভাবে সরকার পড়ে গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে, নির্বাচন হয়েছে। ফলে মোহনবাগান ক্লাবেও নির্বাচন হোক, তাতে সমস্যা মিটুক সেটাই চাই।’
নির্বাচন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ফলে এই ডামাডোল পরিস্থিতি যে বাগানের নতুন মরশুমের দলগঠনে প্রভাব ফেলতে পারে, সেই সংশয় অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন না কম্পটন। তাঁর কথায়, ‘এই ডামাডোলের পরিস্থিতিতে তো কেউই সুষ্ঠুভাবে ক্লাব চালাতে পারবে না। কারণ, এক পক্ষ কাজ করলে অন্য পক্ষ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে। ষড়যন্ত্র করবে। নানান সমস্যা হবে। নির্বাচন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সেটা যেন নতুন মরশুমের আগে দল গঠনে প্রভাব না ফেলে। আই লিগের জন্য হাতে সময় আছে। তবে কলকাতা লিগের জন্য আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি তো ২৫ জনের একটা দল করে দিয়েছে। প্রয়োজনে তাদের রেখে দেওয়া হোক। কারণ প্লেয়ারের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। সেজন্য মোটা টাকা দরকার। সেই টাকা তো বর্তমানে যাঁরা ক্লাব চালাচ্ছেন তাঁদেরই জোগাড় করতে হবে। পদত্যাগ করে যাঁরা সরে গেছেন, তাঁরা তো কোনও দািয়ত্বে কাজ করবেন না। ফলে যাঁরা দায়িত্বে বহাল, তাঁরা সেটা পালন করতে না পারলে ক্লাবের সুনামে প্রভাবে ফেলবে। সেটা দুঃখের।’
বর্তমান কমিটির মেয়াদ ১৭ মে পর্যন্ত। যা পরিস্থিতি তাতে বাগানে নির্বাচনী দামামা বাজা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে কম্পটন চান, নির্বাচন প্রক্রিয়া চলুক। সেই সঙ্গে ক্লাবের প্রয়োজনীয় কাজগুলো চলুক। এবং মোহনবাগান ক্লাব পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পাক। কী হয়, সেটাই দেখার।
সৌজন্যে - আজকাল
সৌজন্যে - আজকাল
No comments:
Post a Comment