গোপীর অ্যাকাডেমিতে বাড়ছে বাংলার শ্রেয়া - Sports Gallery

Sports Gallery

খেলাধুলার সব খবর, একসাথে হাতের মুঠোয়

গোপীর অ্যাকাডেমিতে বাড়ছে বাংলার শ্রেয়া

Share This

নির্মলকুমার সাহা: ২০১২–র লন্ডন অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন সাইনা নেহাল। ২০১৬–য় রিও অলিম্পিকে রুপোর পদক গলায় তুলেছিলেন পি ভি সিন্ধু। ওঁদের খুব কাছ থেকে দেখতে দেখতে এখন হায়দরাবাদে গোপীচাঁদ ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে বেড়ে উঠছে বাংলার এক মেয়ে শ্রেয়া তেওয়ারি। যার স্বপ্নটা বেশ বড়। ওই রুপো, ব্রোঞ্জের সীমানা ছাড়িয়ে শ্রেয়ার চোখ অলিম্পিকের সোনার পদকে। দুই সপ্তাহ আগে ১৪ পূর্ণ হল। এই ১৪–তেই ওর চোয়াল খুব শক্ত। বলল, ‘সাইনাদি, সিন্ধুদিকে খুব কাছ থেকে দেখছি। গোপীস্যরের কাছে কোচিং তো নিচ্ছিই। পরামর্শ চাইলে পাচ্ছি সাইনাদি, সিন্ধুদির কাছ থেকেও। ওঁদের যত দেখছি, মুগ্ধ হচ্ছি। ওঁদের দেখেও শেখার চেষ্টা করছি। আমার স্বপ্ন আরও বড় হচ্ছে। ভাবছি, ওঁরা যদি অলিম্পিকে পদক জিততে পারেন, আমিই বা পারব না কেন। রুপো, ব্রোঞ্জ নয়, অলিম্পিকে আমি গোল্ড মেডেলই জিততে চাই। ওই টার্গেট নিয়েই এগোচ্ছি।’‌ ‌‌



সঞ্জয় ও অর্চনা তেওয়ারি, শ্রেয়ার বাবা ও মা। দু’‌জনেরই পেশা শিক্ষকতা। সঞ্জয় ম্যাকলিয়ড স্ট্রিট ইন্দিরা অ্যাকাডেমি স্কুলের প্রিন্সিপাল। অর্চনাও ওই স্কুলের শিক্ষক। ওই স্কুলেরই ক্লাস নাইনের ছাত্রী শ্রেয়া। গোপীচাঁদের অ্যাকাডেমিতে থাকার জন্য এখন আর নিয়মিত স্কুলের সঙ্গে শ্রেয়ার যোগাযোগ নেই। স্কুলে আসতে হয় শুধু পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। 
শ্রেয়ার ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু পার্ক সার্কাস ব্যায়াম সমিতিতে তাপস বিশ্বাসের কাছে। শ্রেয়ার বাবা সঞ্জয় তেওয়ারি এখনও খুব গুরুত্ব দেন কোচ হিসেবে তাপস বিশ্বাসের ভূমিকাকে। সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‌নিজে দায়িত্ব নিয়ে ওকে খেলা শিখিয়েছেন। ওর ভাল–মন্দ সবেতেই পাশে আছেন।’‌ ওখান থেকেই ২০১৬ সালে চলে যাওয়া হায়দরাবাদে গোপীচাঁদ ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে। তখন অনূর্ধ্ব ১৩ বিভাগে ভারতে ওর র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৭। ট্রায়াল দিয়েই ওই অ্যাকাডেমিতে ঢোকার সুযোগ করে নিয়েছিল। সেই থেকে ওখানেই আছে শ্রেয়া। 



বাইরের অনেক ছেলেমেয়ের সঙ্গে হায়দরাবাদে বাড়ি ভাড়া করে মা থাকেন। কিন্তু শ্রেয়া ওখানে একাই। থাকে অ্যাকাডেমির ডর্মিটরিতে, আরও অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। বলছিল, ‘‌অনেকেই ওখানে থাকে। কোনও সমস্যা নেই। সবাই বন্ধু হয়ে গেছে।’‌ ওখানে চলে গেলেও শ্রেয়া এখনও বাংলার খেলোয়াড়। ফলে এখানে খেলা থাকলে এসে খেলতেও হয়। গত কয়েক বছর ধরে বয়সভিত্তিক রাজ্য পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সাফল্যও। জাতীয় পর্যায়েও আছে প্রথম দিকেই। তবে গতবছর আগস্ট মাসে টাইফয়েড হওয়ায় কিছুদিন অনুশীলনের বাইরে থাকতে হয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছিল খেলায়ও। আর এ বছরের শুরুতেই গোপীচাঁদের অ্যাকাডেমির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় পায়ে চোট পাওয়ায় যেতে পারেনি। 



শ্রেয়া বলছিল, ‘‌হায়দরাবাদে বেশ ভালই আছি। ওখানে মন দিয়ে প্র‌্যাকটিস করছি। গোপীস্যর যখন থাকেন নিজেই অনেক কিছু দেখিয়ে দেন। যখন তিনি বাইরে থাকেন অন্য স্যরদের কাছে প্র‌্যাকটিস করি।’‌ এরপর সাইনা, সিন্ধুর কথা তুলতেই শ্রেয়া বলল, ‘‌ওঁরাও আমাদের পাশের কোর্টে প্র‌্যাকটিস করেন। ওঁদের প্র‌্যাকটিস দেখতে দেখতে অনেক কিছু শেখার চেষ্টাও করি। কয়েকবার ওঁদের পরামর্শও পেয়েছি।’‌ কিছুদিন আগে কমনওয়েলথ গেমসের ফাইনালে সাইনা–সিন্ধু মুখোমুখি হয়েছিলেন। শ্রেয়া বলছিল, ‘‌টিভিতে সাইনাদি–সিন্ধুদির ফাইনাল খেলা দেখতে দেখতে খুব আনন্দ হচ্ছিল। আমাদের অ্যাকাডেমির দুই দিদিকে ফাইনালে খেলতে দেখে খুব গর্বও হচ্ছিল।’‌ ‌‌‌

সৌজন্যে - আজকাল

No comments:

Post a Comment

Pages