আজকালের প্রতিবেদন— আরও বেকায়দায়। একটু ভুল বলা হল। মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র এখন আরও কোণঠাসা।
শুরুটা হয়েছিল সহ–সচিব সৃঞ্জয় বসু ও অর্থসচিব দেবাশিস দত্তের পদত্যাগ দিয়ে। তারপর মহেশকুমার টেকরিওয়াল।
আর সোমবার দুপুরে তো এক–আধজন নয়, একসঙ্গে ১৩ জনের পদত্যাগ!
ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চ্যাটার্জি, টেনিস সচিব উত্তম সাহা–সহ কর্মসমিতির ১৩ জন সদস্য একযোগে এদিন ইস্তফা দিলেন নিজেদের পদ থেকে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, কর্মসমিতির আরও দুই সদস্য শৈলেন ঘোষ ও সম্রাট ভৌমিকও খুব শিগগিরই ইস্তফা দিতে চলেছেন। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে ক্লাবের বর্তমান কমিটি নিষ্ক্রিয় হওয়ার পথেই এগোচ্ছে।
আশ্চর্যজনক ভাবে অঞ্জন–ঘনিষ্ঠ লোকজনও দলবদল করে পদত্যাগের রাস্তায় হঁাটছেন। যেমন মহেশ টেকরিওয়াল, অসিত চ্যাটার্জি, বিশ্বনাথ সেন। যা দেখে অঞ্জনের কপালে চিন্তার ভঁাজ আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ৪ তারিখ সিএবি–র নকআউট ডার্বি থাকায় ক্রিকেট সচিব সম্রাট ভৌমিকের তার পরের দিন ইস্তফা দেওয়ার কথা। আরেক সদস্য শৈলেন ঘোষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তিনিও পদত্যাগ করবেন। নির্বাচিত কমিটির মধ্যে সচিব অঞ্জন মিত্রকে ধরে পদত্যাগ করেননি, সেই দলে মাত্র ৭ জন! অঞ্জন মিত্র, সোহিনী মিত্র, স্বপন (বাবুন) ব্যানার্জি, মদন দত্ত, কাশীনাথ দাস, স্বাধীন মল্লিক ও শুভাশিস পাল। এঁদের মধ্যে থেকেও আগামী দিনে যে পদত্যাগের টিমে নাম লেখাবেন না, এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারছেন না।
অন্যদিকে, এদিন পদত্যাগ করা সদস্যদের মধ্যে ৭ জন বিকেলে হাজির হয়েছিলেন ক্লাব তঁাবুতে। ছিলেন দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বসুও।
মহেশকে ধরে সোমবার ইস্তফা দেওয়া ১৪ জনের মধ্যে ৩ জন (বিশ্বনাথ সেন, সুরজিৎ নন্দী, তন্ময় চ্যাটার্জি) স্পেশ্যাল ইনভাইটি সদস্য। এঁদের ভোটিং পাওয়ার নেই। বাকি ১১ জনের সঙ্গে দেবাশিস ও সৃঞ্জয়কে নিয়ে ১৩ জন ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। সভাপতি টুটু বসুও আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। নির্বাচিত কমিটি মোট ২০ জন+২ (কো–অপ্ট সদস্য)+১ (সভাপতি)। অঙ্কেই পরিষ্কার, মিত্র বনাম বসু লড়াইয়ে ‘অ্যাডভান্টেজ’ বসু গোষ্ঠী।
সচিবের বাড়িতে গিয়ে মিটিংেয়র পরই পদত্যাগের সম্ভাবনা উসকে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ চ্যাটার্জি। সোমবার তঁাবুতে দঁাড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের কোনও রাস্তাই দেখাতে পারলেন না সচিব। সোমবার পর্যন্ত উনি সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। প্লেয়ারদের পেমেন্ট নিয়ে কোনও সমাধানের রাস্তাই বের হয়নি। কোনও ফোন পাইনি সচিবের কাছ থেকে। তাই, আমাদের এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।’
গণপদত্যাগ নিয়ে সচিব অঞ্জন মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখছি। এর বেশি এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না।’ তবে পদত্যাগ করেননি মাঠ–সচিব স্বপন (বাবুন) ব্যানার্জি। তিনি বললেন, ‘আমি অঞ্জন মিত্র এবং টুটু বসু— দু’জনের হাত ধরেই মোহনবাগানে এসেছি। এই পরিস্থিতিতে কারুর বিরুদ্ধেই জেতে পারব না। তাই পদত্যাগ করিনি। মোহনবাগানের সদস্য হিসেবেই কাজ করে যেতে চাই।’
সচিব কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেন, সেটাই এখন দেখার। মোহনবাগানের পদত্যাগী সদস্যরা বুধবার দুপুরে ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে মিলিত হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের রূপরেখার ইঙ্গিত দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন।
শেষ দেখা? ইউতাকে শুভেচ্ছা সৃঞ্জয়, সত্যজিৎ, দেবাশিসের। ছবি: রনি রায়
No comments:
Post a Comment